Transmission line

বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদিত পাওয়ারকে ট্রান্সমিশন লাইন বা গ্রীড লাইনের মাধ্যমে এক স্থান থেকে অন্য স্থান পরিবহন করতে হয় ।পাওয়ার ট্রান্সমিশনের জন্য লক্ষ্য রাখা অপরিহার্য যাতে ট্রান্সমিশন জনিত লস কম হয় , ভোল্টেজ রেগুলেশন ভাল হয় এমনকি ট্রান্সমিশন ব্যয় কম হয় । ১। একটি আধুনিক এ, সি পাওয়ার সিস্টেমের উপাদানগুলির নাম লিখ। উত্তরঃ এসি ব্যবস্থায় ট্রান্সমিশন তিন ফেজে তিন তার এবং ডিস্ট্রিবিউশনের ক্ষেএে তিন ফেজ চার তার ব্যবস্থা সাধরণত ব্যবহৃত হয় । একটি আধুনিক এসি পাওয়ার সিস্টেমের উপাদান সমুহ সাধারণতঃ নিম্নরূপ হয়ে থাকেঃ- ক] উৎপাদন কেন্দ্র । খ] স্টেপ আপ কেন্দ্র । গ] ট্রান্সমিশন লাইন। ঘ] সুইচিং ষ্টেশন। ঙ] স্টেপ ডাউন উপকেন্দ্র । চ] প্রাইমারী ডিষ্ট্রিবিউশন লাইন বা নেটওয়াক্। ছ] সার্ভিস ট্রান্সফরমার বা বিতরণ ট্রান্সফরমার। জ] সেকেন্ডারি ডিষ্ট্রিবিউশন লাইন। ২। ফিডার কাকে বলে? ফিডার লাইনের বৈশিষ্ট্য কি কি? উত্তরঃ বিভিন্ন জনবহুল এলাকা, শিল্পাঞ্চল বা আবাসিক এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণের জন্য উচ্চ ভোল্টেজ উপকেন্দ্র বা গ্রিড উপকেন্দ্র থেকে বিভিন্ন লোড সেন্টারে বিদ্যুৎ সরবরাহের নিমিত্তে যে বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণ করা হয় তাকে ফিডার বলে । অর্থাৎ উচ্চ ভোল্টেজ বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র হতে নিন্মচাপের বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের মধ্যে সংযুক্ত লাইনের নামই ফিডার । ফিডার লাইনের বৈশিষ্ট্য সমুহ নিন্মরুপঃ ১। ফিডারে কোন ট্যাপিং থাকেনা । ২। কারেন্ট ডেনসিটি সর্বত্র সমান থাকে । ৩। সর্বত্র কারেন্ট ক্যাপাসিটরের উপর ভিত্তি করে ডিজাইন করা হয় । ৪। ভোল্টেজ ড্রপ তত গুরত্ব দেওয়া হয় না । ৩। করোনা কি? করোনার ফলে কি কি ইফেক্ট এর সৃষ্টি হয়? উত্তরঃ যখন ২টি কন্ডাকটর এর Spacing ব্যাসের তুলনায় বেশি অবস্থায় রেখে তাদের আড়াআড়ি AC Voltage প্রয়োগ করে ধিরে ধিরে বাড়ানো হয় তখন এমন একটি বিশেষ পর্যায় আশে যে পর্যায়ে কন্ডাকটর এর চার পাশে বাতাস ইলেক্ট্রোস্ট্যাটিক stress হয়ে আয়নিত হয় এবং বাতাসের ইন্সুলেশন ষ্ট্রেংথ ভেঙ্গে পড়ে । এই অবস্থায় কন্ডাকটর এর চার পাশে জিম জিম শব্দ সহকারে যে হালকা অনুজ্জল বেগুনি রশ্মি দেখা যায় এবং ওজন গ্যাসের সৃষ্টি হয় উহাই করোনা নামে পরিচিত । করোনার ইফেক্ট বা প্রভাবঃ ১। হামিং বা হিস হিস শব্দ সৃষ্টি করে ২। কন্ডাক্টরের চার পাশে বেগুনি আভা দেখা যায় ৩। ওজন গ্যাসের সৃষ্টি ৪। হারমনিক্স কারেন্টের সৃষ্টি হয় ৫। পাওয়ার লস হয় ৪। করোনার সুবিধা-অসুবিধা কি কি ?করোনা পাওয়ার লস কি? সুবিধাঃ ১। সার্জ ভোল্টেজ এর ফলে সৃষ্ট ট্রানজিয়েন্ট ইফেক্টকে সীমিত রাখে বলে একে সুইস গিয়ারের Safety bulb হিসাবে ব্যাবহার হয় । ২। করোনার কারনে পরিবাহিদ্বয়ের মাঝে ইলেক্ট্রোস্ট্যাটিক স্ট্রেস এর মান হ্রাস পায়, কারন এসময় পরিবাহীর চারপাশে বাতাস পরিবাহী হিসাবে কাজ করে ও পরিবাহীর virtual ব্যাস বৃদ্ধি পায় । অসুবিধাঃ ১। পাওয়ার লস হয় ২। ওজন গ্যাসের সৃষ্টি হয় ৩। পরিবাহী ক্ষয়প্রাপ্ত হয় ৪। হারমনিক্স এর সৃষ্টি হয় ৫। নিকটবর্তী কমিউনিকেশন লাইনে বিঘ্ন ঘটে ৬। দক্ষতা হ্রাস পায় করোনা সংগঠিত হওয়ার কারনে যে পাওয়ার লসের সৃষ্টি হয়, তাকে করোনা লস বলে । ইহাকে p দ্বারা প্রকাশ করা হয় । ৫। স্কিন ইফেক্ট কি? উত্তরঃ এসি বিদ্যুৎ প্রবাহে কোন পরিবাহীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় সে পরিবাহীর ভিতরে প্রবেশ না করে পরিবাহীর উপরিভাগ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার চেষ্টা করে, এটাকে স্কিন ইফেক্ট বলে । স্কিন ইফেক্টের কারনে লাইনের রেজিষ্ট্যান্স বৃদ্ধি পায় ফলে লাইন লসও বৃদ্ধি পায় । ৬। ট্রান্সমিশন লাইনে স্কিন ইফেক্ট এর প্রভাব লিখ? কমানোর উপায় কি? উত্তরঃ ট্রান্সমিশন লাইনে স্কিন ইফেক্টের কারনে লাইনের রেজিষ্ট্যান্স বৃদ্ধি পায় ফলে লাইন লসও বৃদ্ধি পায় । স্কিন ইফেক্ট কমানোর উপায়ঃ ১। কন্ডাক্টরের ব্যাসার্ধ কমিয়ে ২। ফাঁপা সিলিন্ডার আকারের পরিবাহী ব্যাবহার করে ৩। Stranded কন্ডাকটর ব্যবহার করে ৪। ব্যারেল আকৃতির ও Aluminium কন্ডাকটর ব্যবহার করে । ৭। প্রক্সিমিটি ইফেক্ট কাকে বলে? ইহার প্রভাব ও কমানোর উপায় লিখ । উত্তরঃ যখন একটি কারেন্ট পরিবাহী এর পাশে আরেকটি কারেন্ট পরিবাহী থাকে, তখন এর ফ্লাক্স পূর্বের কারেন্ট পরিবাহীতে সংশ্লিষ্ট হয় । এই ফ্লাক্সের ফলাফল উভয় কন্ডাক্টরের দূরবর্তী অর্ধাংশের চেয়ে নিকটবর্তী অর্ধাংশে বেশি দেখা যায় । যার ফলে কন্ডাকটর সমগ্র প্রস্থচ্ছেদ ব্যপিয়া অসম কারেন্ট বণ্টন হতে থাকে এবং স্কিন ইফেক্টের ন্যায় রেজিষ্ট্যান্স বৃদ্ধি পায় । এই ঘটনাকে প্রক্সিমিটি ইফেক্ট বলে । প্রভাবঃ এই ইফেক্টের ফলে কন্ডাকটর সমগ্র প্রস্থচ্ছেদ ব্যপিয়া অসম কারেন্ট বণ্টন হতে থাকে এবং স্কিন ইফেক্টের ন্যায় রেজিষ্ট্যান্স বৃদ্ধি পায় ও সেলফ রিয়্যাকট্যান্সের মান হ্রাস পায় । কমানোর উপায়ঃ ১। ফ্রিকুয়েন্সি রেঞ্জ কমিয়ে ২। কন্ডাকটর এর স্পেসিং বৃদ্ধি করে ৩। Stranded কন্ডাকটর ব্যবহার করে ৮। এডি কারেন্ট লস কাকে বলে? উত্তরঃ হিসটেরেসিস লস ছাড়াও চৌম্বক উপাদানের মজ্জায় আবর্তমান বা এডি কারেন্টের কারনে কিছু অপচয় হয়, একে এডি কারেন্ট লস বলে। ৯। বিদ্যুচৌম্বক আবেশ (Eletromagnetic Induction) কাকে বলে? উত্তরঃ যখন কোন পরিবাহী বা কন্ডাকটরের সাথে সংশ্লিষ্ট চৌম্বক ফ্লাক্স পরিবর্তিত হয়, তখন পরিবাহীটির ভিতরে একটি ই. এম. এফ আবিষ্ট হয়। যদি পরিবাহীটি একটি লুপ বা সার্কিট গঠন করে, তবে এতে কারেন্ট প্রবাহিত হবে। এই প্রক্রিয়াকেই বিদ্যুচৌম্বক আবেশ (Eletromagnetic Induction) বলে। ১০। ফ্যারাডের সূত্র লিখ। উত্তরঃ প্রথম সুত্রঃ একটি তার বা কয়েলে ই. এম. এফ আবিষ্ট হয় তখন, যখন উক্ত তার বা কয়েলের সাথে সংশ্লিষ্ট চৌম্বক ফ্লাক্স বা চৌম্বক বল রেখার পরিবর্তন ঘটে। দ্বিতীয় সুত্রঃ আবেশিত বিদ্যুচ্চালক বল এর পরিমান চৌম্বক বল রেখার পরিবর্তনের হারের সাথে সরাসরি সমানুপাতিক। উপরোক্ত সূত্র দুটি একত্রে এভাবে লেখা যায়ঃ একটি পরিবাহী এবং একটি চৌম্বক ক্ষেত্রে আপেক্ষিক গতি যখন এরুপভাবে বিদ্যমান থাকে যে, পরিবাহীটি চৌম্বক ক্ষেত্রটিকে কর্তন করে, তখন পরিবাহিতে আবেশিত একটি বিদ্যুচ্চালক বল সংঘটিত কর্তনের হারের সাথে সমানুপাতিক। ১১। লেনজের সূত্র লিখ। উত্তরঃ আবেশিত বিদ্যুচ্চালক বলের কারনে পরিবাহী তারে প্রবাহিত আবেশিত কারেন্ট পরিবাহী তারের চারপাশে একটি চৌম্বক ক্ষেত্র সৃষ্টি করে, যা দারা আবেশিত কারেন্টের উৎপত্তি, উহাকেই (অর্থাৎ পরিবর্তনশীল ফ্লাক্স) এ (সৃষ্ট চৌম্বক ক্ষেত্র) বাধা প্রদান করে । ১২। লেনজের সূত্র কোথায় ব্যবহার হয়? উত্তরঃ যেখানে পরিবাহী স্থির এবং চৌম্বক ক্ষেত্র গতিতে থাকে সেখানে লেনজের সূত্র ব্যবহার হয়। ১৩। ফ্লেমিং এর রাইট হ্যান্ড রুল কি? উত্তরঃ দক্ষিণ হস্তের বৃদ্ধাঙ্গুলি, তর্জনী ও মধ্যমাকে পরস্পর সমকোণে রেখে বিস্তৃত করলে যদি তর্জনী চৌম্বক বলরেখার অভিমুখ এবং বৃদ্ধাঙ্গুলি পরিবাহী তারের ঘূর্ণনের অভিমুখ নির্দেশ করে, তবে মধ্যমা পরিবাহিতে প্রবাহিত আবেশিত কারেন্টের অভিমুখ নির্দেশ করেবে। ইহাই ফ্লেমিং এর রাইট হ্যান্ড রুল। ফ্লেমিং এর রাইট হ্যান্ড রুল কোথায় প্রযোজ্য হয়? যেখানে চৌম্বক ক্ষেত্র স্থির এবং পরিবাহী গতিতে থাকে, সেখানে ফ্লেমিং এর রাইট হ্যান্ড রুল ব্যবহার করা হয়। ১৪। মিউচুয়াল ইনডাকট্যাঁন্স কাকে বলে? উত্তরঃ যে বৈশিষ্ট্য বা ধর্মের কারনে পাশাপাশি দুটি কয়েলে একটির কারেন্টের পরিবর্তনের ফলে অন্যটিতে ভোল্টেজ আবিষ্ট হয় উক্ত ধর্ম বা বৈশিষ্ট্যকে মিউচুয়ালড় ইনডাকট্যাঁন্স বলে। ১৫। সেলফ ইনডাকট্যাঁন্স কাকে বলে? উত্তরঃ এটা কয়েলের এমন একটি ধর্ম বা বৈশিষ্ট্য, যা কয়েলে প্রবাহিত কারেন্ট বা কয়েলের চারদিকের ফ্লাক্সের হ্রাস- বৃদ্ধিতে বাধা দান করে। ১৬। হিসটেরেসিস কাকে বলে? উত্তরঃ চৌম্বক গুণাবলীর কিছুটা অংশ চৌম্বক পদার্থ কত্রিক নিজের মধ্যে রেখে দেয়ার প্রবনতাকেই হিসটেরেসিস বলে। ১৭। এডি কারেন্ট কি? উত্তরঃ যখন একটি বৈদ্যুতিক চুম্বকের কয়েলের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত কারেন্ট পরিবর্তিত হতে থাকে, তখন চৌম্বক ক্ষেত্রও পরিবর্তিত হতে থাকে। এই পরিবর্তনশীল ফ্লাক্স কয়েলের তারকে কর্তন করে, ফলে কয়েলে একটি ভোল্টেজের সৃষ্টি হয়। একই সময়ে এই ফ্লাক্স লৌহ দণ্ডকেও কর্তন করে। ফলে এই লৌহ দণ্ডেও ভোল্টেজের সৃষ্টি হয়। এই ভোল্টেজের কারনে লৌহ দণ্ডে একটি কারেন্ট আবর্তিত হতে থাকে, এই আবর্তিত কারেন্টকেই এডি কারেন্ট বলে। ১৮। এডি কারেন্ট লস কাকে বলে? উত্তরঃ হিসটেরেসিস লস ছাড়াও চৌম্বক উপাদানের মজ্জায় আবর্তমান বা এডি কারেন্টের কারনে কিছু অপচয় হয়, একে এডি কারেন্ট লস বলে। ১৯। চৌম্বকী করন চক্র কাকে বলে? উত্তরঃ একটি লোহাকে চুম্বকে পরিনত করা, আবার চুম্বকহীন করা এবং আবার চুম্বকে পরিনত করা, আবার চুম্বকহীন করা, এই প্রক্রিয়া অনবরত চলতেই থাকলে এই প্রক্রিয়াকেই চৌম্বকী করন চক্র (সাইকেল অব ম্যাগনেটাইজেশন) বলে। ২০। ম্যাগনেটাইজেশন বা B-H কার্ভ কি? উত্তরঃ X- এক্সিস কে ম্যাগনেটাইজিং ফোরস (H) এবং Y- এক্সিস কে ফ্লাক্স ডেনসিটি (B) হিসেবে ধরে যে কার্ভ আকা হয় তাকে ম্যাগনেটাইজেশন বা B-H কার্ভ বলে।

Comments