About induction motor/ইন্ডাকশন মোটর সম্পর্কিত

ইলেক্টিক মোটর নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন ও উত্তরঃ-

ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ আগ্রহীদের জন্য মোটর সম্পর্কে জানা খুবই প্রয়োজন।  বিশেষ করে যাদের রোবট  ও রোবোটিক্স এর উপর কাজ করার ইচ্ছা। কারণ রোবটের মুভমেন্ট কন্ট্রোলিং এরজন্য ভিন্নভিন্ন মোটর ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে।মোটরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলি নিয়ে আজকের এই লেখা। জানতে পারবো মোটর কি, মোটর কত প্রকার, মোটর কিভাবে কাজ করে, ডিসি মোটর কিভাবে কাজ করে, এসি মোটর কত প্রকার ইত্যাদি সম্পর্কে। চলুন পাঠক দেরি না করে শুরু করি।

বৈদ্যুতিক মোটর কি?
উত্তরঃ মোটর  হচ্ছে এমন একটি ডিভাইস যেটা ইলেকট্রিক এনার্জি বা বিদ্যুৎ শক্তিকে মেকানিক্যাল এনার্জি বা যান্ত্রিক শক্তিতে রুপান্তর করে তাই বৈদ্যুতিক মোটর।
আরো বলতে গেলে বৈদ্যুতিক মোটর হল এমন একটি কৌশল এবং ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে বৈদ্যুতিক শক্তি যান্ত্রিক শক্তিতে রুপান্তরিত হয়। প্রকারভেদ অনু্যায়ী এর গঠন ও ক্ষমতা নিয়ন্ত্রিত হয়। বৈদ্যুতিক মোটর তড়িত প্রকৌশলের আলোচ্য একটি বিষয়। বৈদ্যুতিক মোটর মূলত ফ্যারাডের আবেশ সূত্রের উপর ভিত্তি করে তৈরী করা হয়ে থাকে।

মোটরে প্রবাহিত তড়িৎ এর ধরন অনুযায়ী
মোটর সাধারনত দুই ধরনের হয়ে থাকে। যেমনঃ
*এসি মোটর
*ডিসি মোটর

১) এসি মোটর : এসি মোটরের সাথে আমরা কমবেশি সব্বাই পরিচিত । বৈদ্যুতিক পাখা, পানির পাম্প ইত্যাদি সবই এসি মোটর এর উদাহরণ । (আমরা এখানে মূলত ডিসি মোটর এর উপর বেশি গুরুত্ব দিব ।
২) ডিসি মোটর : বাজারে বেশ কয়েক প্রকারের ডিসি মোটর পাওয়া যায় । এদের প্রত্যেকেই বিশেষ বিশেষ কাজে পটু । এদের ভিতর কারো RPM(Revolution Per Minute) বেশি , কারো RPM কম , কারো টর্ক বেশি, কারো টর্ক কম ইত্যাদি ।

একটি ইন্ডাকশন মোটরের প্রধান দুটি অংশ থাকে ?
১। ষ্টেটর
২। রোটর

তিন ফেজ ইন্ডাশন মোটরের ডায়াগ্রাম অঙ্কন করতে কি কি টেস্ট জানা দরকার ?
১। নো- লোড টেস্ট
২। শর্ট সার্কটি টেস্ট
৩। স্টেটর রেজিস্ট্যান্স টেস্ট

সিনক্রোনাস মটর কি?
যে মটর সিনক্রোনাস গতিবেগে ঘুরে তাকে সিনক্রোনাস মটর বলে।
সিনক্রোনাস গতিবেগে Ns= 120f/p
সিনক্রোনাস মোটরের কোথায় কি ধরনের সরবরাহ দেওয়া হয়?
উত্তরঃ ষ্টেটরে ৩ ফেজ এ.সি এবং রোটরে ডি.সি সরবরাহ দেওয়া হয়।

মোটরের টর্ক কিঃ

কোন ঘূর্নায়মান বস্তুর ব্যাসার্ধ ভেক্টর ও প্রযুক্ত বলের ভেক্টর গুনফলকে টর্ক বলে।

সিনক্রোনাস মোটরের বিভিন্ন টর্কের তালিকা-
১। স্টার্টিং টর্ক
২। রার্নিং টর্ক
৩। পুল-ইন টর্ক
৪। পুল আউট টর্ক
৫। Reluctance Torque
৬। Locked Rotor Torque

#মোটরের বিপরীত ভোল্টেজ বা #Back_EMF:

এখন কথা হলো ব্যাক ভোল্টেজ জিনিস টা কি? একই জিনিস কিন্তু একটুখানি ভিন্ন কথা। থিওরি হিসেবে বলতে গেলে বলতে হবে, ”বিপরীত ভল্টেজ হল সেই ভোল্টেজ যা উতপাদিত কারেন্ট এর বিপরীতে শক্তি প্রদান করে এবং শক্তির ক্ষয়করে”। একে একেবারে দূর করা প্রায় অসম্ভব, তবে যতটা সম্ভব কমিয়ে রাখার ব্যবস্থা আছে।
কথা প্রসঙ্গে বলছি মোটর, রিলে, ট্রান্সফরমার  বা যে কোনো তার দিয়ে প্যাঁচানো লোড কে ইন্ডকটিভ লোড বলে। এবং আমরা প্রায় সময়ই ইলেকট্রনিক্স সার্কিট সমূহে এই ব্যাক ইএমএফ থেকা বাঁচবার জন্য ।

শান্ট ওয়াইন্ডিং এবং সিরিজ ওয়াইন্ডিংঃ

এই দুইটি জিনিস প্রতিটি মোটর বা জেনারেটরে থাকবেই। আসলে এটি হছে এক প্রকারের কয়েল বা তারের প্যাঁচ। কিন্তু নামের ভিন্নতা কিসের জন্য? হ্যা সেটাই বলছি। প্র্যাক্টিকালি এবং সরাসরি বলতে গেলে বলতে হবে- যে কয়েলের তার গুলো চিকন কিন্তু অনেক গুলো প্যাঁচ থাকে তাকে শান্ট ওয়াইন্ডিং বা শান্টের প্যাঁচ বলে। এর বিশেষত্ব হল এর প্যাঁচ অনেক এবং তার গুলো অনেক সরু হয়। যারফলে এর মধ্যে দিয়ে খুব বেশি পরিমাণ কারেন্ট প্রবাহিত হতে পারে না, অর্থাৎ এর রেজিস্ট্যান্স বেশি থাকে।আর অন্যদিকে সিরিজ ওয়াইন্ডিং বা সিরিজ প্যাঁচ পুরোপুরি এর উল্টো। মানে, এখানে প্যাঁচ কম থাকে। তারফলে যাহয় তাহল এর মধ্যে দিয়ে অনেক বেশি পরিমাণের কারেন্ট প্রবাহিত হতে পারে।

মোটরের RPM/আরপিএম কিঃ

অনেক সময় অনেক ছোট মোটর থেকে বড় বিশাল আকৃতির মোটরের গায়ে এই জিনিস লেখা থাকে। কিন্তু এটা আমাদের কৌতূহলই থেকে যায়। আসলে এর মানে হচ্ছে- “কোন মোটর এক মিনিটে কত বার ঘূর্ণন সম্পন্ন করতে পারে”। সহজ কথায়, একটি মোটর পূর্ণগতি লাভ করার পর যদি কোন একটি নির্দিষ্ট এক মিনিট কে কেন্দ্র করে তার ঘূর্ণন পরিমান করা হয় তাহলে তার পরিমান কে আরপিএম(RPM) বা ঘূর্ণন প্রতি মিনিট বলে।

ডিসি মোটরের এফিসিয়েন্সি বা লস সমূহঃ

আমরা একটি কথা সবাই জানি যে যেকোন মেশিনের ই আলাদা আলাদা এফিসিয়েন্সি বা আউটপুট ক্ষমতা থাকে। অর্থাৎ, একটি মেশিনের ইনপুট অনুযায়ী আউটপুটে কি রকম শক্তি পাচ্ছে তার হিসাব। এপর্যন্ত পৃথিবীতে এমন কোন মেশিন আবিষ্কার হয় নি যা দিয়ে ১০০ ভাগ এফিসিয়েন্সি পাওয়া সম্ভব। মোটরও এর ভিন্ন কিছু নয়।
কিন্তু এই এফিসিয়েন্সি ইনপুটের তুলণায় কম হওয়ার কারণ কি আসুন তা এক নজরে জেনে নেই। ডিসি মোটরের লস বা ক্ষতি সমূহ কে ৩ ভাগে ভাগ করা যায়। তা হলঃ
• ১। মোটরের কপার ক্ষতি
• ২। মোটরের লোহার ক্ষতি
• ৩। মোটরের মেকানিক্যাল ক্ষতি
তাছাড়াও আরও কিছু ক্ষতি বা লস আছে যেগুলো প্রায় সব মেশিনেই হয়ে থাকে যেমন শব্দ দূষন, ঘর্ষণ এর শক্তি, ব্যাক ভোল্টেজ (আগের কলামে উল্লিখিত)।

মোটরের স্টার্টারঃ

যেকোন ডিসি মোটরের ভিতরেই স্টার্টার নামের একটা অংশ বা পার্টস বসানো থাকে যার কাজ হল একটি নির্দিষ্ট ভোল্টেজে নিয়ে মোটরটিকে চালু করা। অর্থাৎ এর মধ্যে এমন এক ধরনের অটো ভেরিয়েবল রেজিস্ট্যান্স বসানো থাকে যার কাজ হলো ঐ নির্দিষ্ট ভোল্টেজে না পৌঁছা পর্যন্ত স্টার্টারটি মোটর কে চালু হতে দিবে না।ডিসি মোটরের ক্ষেত্রে এর অবদান অনেক।

ডিসি মোটরের ব্যবহারঃ

বাসাবাড়িতে সোলার প্যানেল কিংবা ব্যাটারি দিয়ে পানি তোলার জন্য, আধুনিক বিভিন্ন গাড়িতে, বিভিন্ন সুপার কারের বিশেষ অংশের পরিচালনার ক্ষেত্রে, লিফটের এস্কেলেটরে, রোবট, এছাড়াও আমরা ডিসি মোটর আরও অনেক কাজে ব্যবহার করে থাকি।

ক) গিয়ারলেস মোটর : এটি খুবই সাধারণ একটি মোটর । ছোট বাচ্চাদের খেলনা গাড়িতে , ক্যাসেট প্লেয়ারের ভিতর এটি দেখা যায় ।
এর RPM খুবই বেশি । অর্থাৎ এই মোটর খুবই দ্রুত ঘুরতে পারে । কিন্তু এদের টর্ক খুবই কম । অর্থাং সাধারণত আগুল দিয়েই এদের ঘূর্ণনকে থামিয়ে দেওয়া যায় । স্বাধারণত এদের পেছনের দিকে দুটি টার্মিনাল থাকে । এই টার্মিনাল দুটিতে ব্যাটারির সংযোগ দিলেই সাধারণত এটি ঘুরতে শুরু করে । ব্যাটারির পোলারিটি চেঞ্চ করে দিলেই এটি আবার উল্টাদিকে ঘুরতে শুরু করে ।

খ) গিয়ারড মোটর : এটি গিয়ারলেস মোটরের মতই , শুধু এটির সামনে একটি গিয়ারবক্স যুক্ত থাকে । এটির RPM এবং টর্ক গিয়ারলেস মোটর এর সম্পূর্ণ বিপরীত । অর্থাৎ এর RPM খুব কম । এর ঘূর্ণন মাত্রা গিয়ারলেস মোটর এর তুলনায় অনেক কম । কিন্তু এদের টর্ক খুবই বেশি । অর্থাং সাধারণত আগুল দিয়েই এদের ঘূর্ণনকে থামিয়ে দেওয়া যায় না ।
এর কানেকশন সম্পূর্ণ গিয়ারলেস মোটর এর মতই ।

গ) স্টিপার মোটর : এর নাম থেকেই এর কার্যকারিতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় ।
এটি মূলত step by step ঘুরতে পারে । অর্থাৎ একে ইচ্ছা করলে যে কোন Angle-এ যে কোন ডিগ্রী-কোণে ঘুরানো যায় । এটির ঘূর্ণন পদ্ধতি একটু ভিন্ন । এটি ঘুরাতে স্টিপার-মোটর-ড্রাইভার এর প্রয়োজন । স্টিপার মোটর ড্রাইভিং পদ্ধতি এর বর্ননা ও এর সার্কিট ডায়াগ্রাম নিয়ে পরবর্তী কোন এক পর্বে আলোচনা করা হবে ।

ঘ) সার্ভো মোটর : সার্ভো মোটর অত্যাধিক টর্ক সম্মত । আগুল দিয়ে চেপে ধরে এর গতিকে থামিয়ে দেওয়া যায় না । এটি সাধারণত খুব ভারী জিনিস মুভ করার জন্য ব্যবহৃত হয় । তবে এই মোটরের লিমিটেশন রয়েছে ।



Comments